About Barisal

লাকুটিয়া জমিদার বাড়ি,বরিশাল

১৭০০ সালে রুপচন্দ্র রায়ের পুত্র রাজতন্ত্র রায়ের হাত ধরে মূল্যবান ইট, পাথর আর সুরকি দিয়ে গাঁথা এক সময়ের সাংস্কৃতিক কর্মকারে পীঠস্থান বরিশালের লাকুটিয়া জমিদার বাড়ি।গ্রামের নাম লাখুটিয়া, সেজন্যই জমিদার বাড়ি 'লাখুটিয়া জমিদার বাড়ি' নামে পরিচিত। যদিও এখানকার মানুষ আঞ্চলিক উচ্চারনজনিত কারনে একে 'লাকুটিয়া' বলে।রিশাল শহর থেকে আট কিলোমিটার উত্তরে লাকুটিয়া বাজার। এরপর ইট বিছানো হাঁটাপথ। কিছু দূর যাওয়ার পর মিলবে জমিদারদের অনেক মন্দির আর সমাধিসৌধ। রাস্তার ডান পাশে। এগুলোর বেশির ভাগই আটচালা দেউলরীতিতে তৈরি। শিখররীতির মন্দিরও। পাঁচটা মন্দির এখনো বলতে গেলে অক্ষতই আছে।
মূল ভবন দুই তলা, যা এখনও ভগ্নদশায় দাড়িয়ে আছে। ব্যবহার অনুপযোগী এই ভবনের দরজা, জানালা সব ধ্বংস হয়ে গেছে। এখানে তিনটি মন্দির , দুইটি পুরোনো বাড়ি ও একটি বিশাল দিঘী রয়েছে। জমিদার বাড়ির দক্ষিনে একটি বিশাল দিঘী এখনও ব্যবহার উপযোগী অবস্থায় বর্তমান। মূল ভবনের অদূরে, পশ্চিম দিকে একসারিতে কয়েকটি শিব মন্দির আছে। বর্তমানে যা প্রার্থনার অযোগ্য। মূল ভবনের পূর্ব দিকে, জমিদার বাড়ি ঢোকার মুখে কয়েকটি ছোট ছোট মঠ আছে। সমগ্র জমিদার বাড়ি এখন 'বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (BADC)' এর আওতাধীন। লাখুটিয়া জমিদার বাড়ী বর্তমানে একটি পিকনিক স্পট ও জনপ্রিয় দর্শণীয় স্থান।
শহর থেকে উত্তর দিকে বেশ খানিকটা দূরেই বাজার ছাড়িয়ে লাকুটিয়া জমিদার বাড়ির অবস্থান। প্রায় চার শ’ বছর পূর্বে রাজা রায়চন্দ্র রায় নির্মিত এ বাড়িটি বরিশাল বিভাগের মধ্যে অন্যতম পুরনো জমিদার বাড়ি। প্রায় এক একর জমি নিয়ে বাড়িটি নির্মাণ করা হলেও অযত্নে অবহেলায় লাকুটিয়া জমিদার বাড়িটি এখন ভুতুড়ে বাড়িতে পরিণত হয়েছে। বাড়ির চারদিকের দেয়ালগুলোর পলেস্তারা যত্নের অভাবে খসে পড়তে শুরু করেছে। সহজে বাড়িটির দোতলায় ওঠার কোন উপায় নেই। বাইরের দিকের সিঁড়িটি ভেঙ্গে পড়েছে অনেক আগেই। এ জমিদার বাড়িটি চার শ’ বছরের পুরনো হলেও দ্বিতীয় তলার অংশ এখনও অনেকটা নতুন মনে হয়। জমিদার বাড়ির বেশিরভাগ স্থাপনাই আটচালা দেউল রীতিতে তৈরি। বাড়ির সামনেই রয়েছে কয়েকটি দৃষ্টিনন্দন মঠ। বাড়ির পেছনের অংশের শিখররীতির কয়েকটি মন্দির ইতোমধ্যে ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে।
লোহার দরজা পেরিয়ে জমিদার বাড়ির মূল প্রবেশপথের বাঁ পাশেই শান বাঁধানো ঘাটলা বাঁধা সুন্দর একটি পুকুর। বাড়িটি এখন বিএডিসির তত্ত্বাবধানে আছে। বাঁ পাশে বিএডিসির ট্রাক্টর রাখার ঘর আর ডান পাশে তাঁদের গোডাউন আর অফিস কক্ষ। পেছনে আছে পাকা উঠান, বীজ শুকানো হয়। বাড়িটির ওপর কর্তৃপক্ষের কোনো মায়া-মমতা আছে বলে মনে হলো না। বাড়ির তিন ধারে ধানের জমি। এলাকাবাসী ও স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তি বিশেষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, অনেক আগেই রায়বাহাদুররা ভারতে চলে গেছেন। বছর দশেক আগে একবার ছোট বাহাদুর এসেছিলেন। বাড়ির কাছেই আমবাগান। বাগানটি গড়ে উঠেছে বিশাল এক দীঘির পাড়ে। একে সবাই রাণীর দিঘি বলে। শীতের সময় এখানে অনেকেই পিকনিক করতে আসেন।

এখানে তিনটি মন্দির, দুইটি পুরোনো বাড়ি ও একটি বিশাল দিঘী রয়েছে।

إرسال تعليق

0 تعليقات