![]() |
বিস্কি |
উপকরণ
- চাল ভাজা- ২৫০ গ্রাম
- খেঁজুরের গুড়- পরিমানমত
- নারিকেল কোড়া- ২০০ গ্রাম
- লবন- স্বাদমত
- পানি- পরিমাণমত
প্রণালী
চাল পরিষ্কার করে ধুয়ে লবন ও পানি দিয়ে মেখে নিন। একটি পাত্র গরম করে মাখানো চাল ভেজে নিন। ভাজা চাল কয়েক ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন।পাত্রে খেজুরের গুড়, নারিকেল ভেজানো চাল একসাথে হালকা আঁচে জ্বাল দিন। পানি শুকিয়ে গেলে নামিয়ে নিন। লক্ষ্য রাখতে হবে যেন চার নরম হবে কিন্তু ঝরঝরে থাকবে।চিংড়ি পিঠা
![]() |
চিংড়ি পিঠা |
চিংড়ি পিঠা বরিশাল অঞ্চলের একটা খাবার, ভাতের সাথে খেতে হয়। এর স্বাদ সম্পর্কে একটা কথাই বলতে পারি, এই মহাজগতে এই মানবজন্মে এর মতো স্বাদু জিনিস খুব কমই আছে।
উপকরণ
- দুর্মা নারকেল বাঁটা (বুড়ো ডাব ও কচি নারকেলের মাঝামাঝি বস্তু)।
- শাঁসটা একবারে খাওয়া যায় না, কুঁড়ানি দিয়েও কোঁড়ানো যায় না, এমন
- চিংড়ি মাছ বাঁটা
- আদা বাঁটা
- পেঁয়াজ বাঁটা
- রসুন বাঁটা
- সয়াবিন তেল
- লবণ
- চিনি
- হলুদের গুঁড়ো
- মরিচের গুঁড়ো
- কলা পাতা
প্রণালী
১. সমান পরিমাণ নারকেল আর চিংড়ি বাটার সাথে সামান্য করে আদা, রসুন, আর পেঁয়াজ বাঁটা মাখিয়ে নিতে হবে। সাথে হলুদের গুঁড়ো আর মরিচের গুঁড়ো, লবণ আর কিছুটা চিনি। বাটা মশলাগুলোর পরিমাণ এরকম হবে যাতে করে মশলার গন্ধ নারকেল-চিংড়ির ফ্লেভারকে ছাপিয়ে না যায়। ধরুন, এক কাপ চিংড়ি বাটা আর এক কাপ নারকেল বাটার সাথে এক চামচ করে পেঁয়াজ বাঁটা ও আধা চামচ আদা রসুন বাঁটা।
২. এবার কলা পাতা প্রয়োজনমতো কেটে নিয়ে ভিতরের পিঠে তেল ব্রাশ করতে হবে। হাতে করেও মাখিয়ে নেয়া যায়। কলা পাতার উপরে মিশ্রণটি বসিয়ে আরেক টুকরা পাতায় তেল মাখিয়ে একইভাবে উপর থেকে ঢেকে দিতে হবে।
৩. এবার চুলায় বসাতে হবে। এই প্রসেসটা কয়েকভাবেই করা যায়। রাইস কুকার থাকলে স্টীমে দেয়া যেতে পারে। আবার প্যান জাতীয় কিছু হলে মাটির চুলায়, গ্যাসের চুলায় কিংবা ইলেক্ট্রিক হিটারে অল্প বা মাঝারি আঁচে দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। কতক্ষণ রাখবেন সেটা আপনার হিসেব। সমস্যা হলো, খুলে চেক করতে পারবেন না বারবার। স্টীমে দিলে অবশ্য পোড়া লাগার ঝুঁকি কমে যায়। হাল্কা মাঝারি আঁচে ৩০-৩৫ মিনিট যথেষ্ট। আঁচ খুব বেশি হলে বাইরে পুড়ে যাবে ভিতরটা কাঁচা থাকবে। এক পাশ হয়ে গেলে তুলে এনে উলটে নতুন পাতায় করে আবার চুলায় বা স্টিমে দিতে হবে। এই পাশটাও হয়ে গেলে তৈরি হয়ে গেলো চিংড়ি পিঠা। স্টিমে রান্না করলে হয়ে যাবার পর কিছুক্ষণ দুই পিঠই চুলায় দমে রাখতে হবে। হাল্কা একটু পোড়া পোড়া না হলে কলাপাতার ফ্লেভারটা আসবে না।
হোগল![]() |
হোগল |
বরিশালের আরেকটি পরিচিত খাবারের নাম হোগল। হোগল সাধারণ হোগলার ফুলের গায়ে লেগে থাকা পাউডার থেকে তৈরি হয় বলে একে হোগল বলা হয়। বরিশালে হোগলার পাতার চাষ করা হয় এবং এ অঞ্চলের তৃণমূল কৃষকদের নিকট এটি একটি উপার্জনক্ষম শস্য হওয়াতে বরিশালে হোগলা পাওয়া দূর্লভ কিছু না। সেই সূত্রেই হয়তো এখানে হোগলের প্রচলন।
উপকরণ
চাল ভাজা, দুধ, হোগল, চিনি, লবণ।
প্রস্তুত প্রণালী
প্রথমে ভাজা চাল পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। ঘণ্টাখানেক চাল ভাজা পানিতে ভিজিয়ে রাখার পর একে দুধ ও পানি সহ উনুনে চাপিয়ে দিন। এই মিশ্রণটি সেদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত জ্বাল করতে থাকুন। একসময় চাল সেদ্ধ হয়ে এতে দুধ ও চিনি ঢেলে দিন। দুধ চিনি ঢেলে দিয়ে কিছুক্ষণ নাড়ুন। পানি কমে এলে এতে হোগল ঢেলে দিন। হোগল ঢেলে দিয়ে নাড়তে থাকুন যেন সব উপকরণগুলো একে অপরের ছোঁয়া পায়। এভাবে বেশ কিছুক্ষণ নেড়েচেড়ে নামিয়ে আনুন উনুন থেকে। ব্যস তৈরি হয়ে গেল বরিশালের প্রচলিত খাবার হোগল। এবার আপনি তা পরিবেশন করুন আপনার খাওয়ার টেবিলে অথবা বন্ধুদের আড্ডায়। চমকে দিন সবাইকে। জানিয়ে দিন আপনার রন্ধনশৈলী সম্বন্ধে।
![]() |
মলিদা |
মলিদা
বরিশাল অঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী ও আকর্ষণীয় খাবার হচ্ছে মলিদা। মলিদা ব্যতীত ইদ বা যেকোনো উৎসব বরিশালের মানুষদের কাছে যেন ঠিকমতো জমেই ওঠে না। উৎসবমুখর পরিবেশে বরিশালের মানুষদের মলিদাটা যেন চাই-ই চাই। এ অঞ্চলের ছেল-বুড়ো সবাই বড় দূর্বল এই মলিদার কাছে।
উপকরণ
চিড়া অথবা মুড়ি, কোড়ানো নারিকেল, দুধ, এক কাপ পোলায়ের চাল ও আদা কুচি অথবা বাটা।
আকর্ষণীয় এই মলিদা তৈরি করতে আপনাকে যা করতে হবে তা হলো, প্রথমেই আপনি নারিকেল কুড়িয়ে নিন। এবার কোড়ানো নারিকেলগুলো আলাদা পাত্রে রেখে দিন। এরপর পোলায়ের চাল ভাল করে বেটে পেস্ট করে নিন। চালগুলো খুব মিহি করে বাটতে হবে।খেয়াল রাখতে হবে, কোনো দানা যেন না থাকে। আপনি চাইলে পোলায়ের চালগুলো ব্লেন্ডার করে নিতে পারেন। সেখানেও খেয়াল রাখবেন, যেন চালের কোনো দানা না থাকে। সব যেন একদম মিহি হয়ে যায়। এবার দুধ উনুনে বসিয়ে ভাল করে জ্বাল করে নিন। দুধের মধ্যে চিনি মিশিয়ে নেবেন। দুধটা জ্বাল করার পর একে বেশ কিছুক্ষণ ঠাণ্ডাস্থানে রেখে দিন।কেননা মলিদা ঠাণ্ডা খেতেই ভাল লাগে। দুধ ঠাণ্ডা হয়ে গেলে তাতে চালের পেস্ট মিশিয়ে দিন। চালের পেস্টটা মিশিয়ে একটু নেড়ে দিন যেন দুধের সাথে মিশে যায়। চালের পেস্ট মেশানোর পর এতে নারিকেল দিয়ে দিন।নারিকেলগুলো ভাল করে মিশিয়ে ফেলুন যেন দুধ, চাল ও নারিকেল একে অপরের সাথে ভালভাবে মিশে যায়। অতঃপর এতে সামান্য আদা বাটা বা কুচি ঢেলে একটু লবণ ছিটিয়ে নাড়তে থাকুন। ব্যস আপনি তৈরি করে ফেললেন বরিশালের ঐতিহ্যবাহী খাবার মলিদা।
0 Comments