About Barisal

বরিশালে হীম নীড় পদ্ম পুকুরের পদ্ম ফুল।

বরিশালে শ্বেতপদ্মের শোভায় আলেকিত ‘হীম নীড়’ ও ‘চান বাংলো’ চত্বর। যে চত্বরের একমাত্র জলাশয়টি গোলাপি নয় শ্বেতপদ্মে ভরে গেছে।এক সাথে এতো পদ্মের দেখা মেলা সত্যিই বিরল। তাই  এক নামেই বরিশালের ‘পদ্মপুকুর’ নামে পরিচিত জলাশয়টি।
এখানকার নয়নশোভন এই শ্বেতপদ্ম দেখতে প্রতিদিনই মানুষ আসছেন। ঘুরে দেখছেন পুকুরের চারপাশ। কখনো পুকুরপাড়ে আবার কখনো পুকুরঘাটে বসে ছবি তুলছেন। আবার বেরসিক কেউ কেউ অন্যায়ভাবে সংশ্লিষ্টদের চোখ ফাঁকি দিয়ে যে লুকিয়ে পদ্ম তোলার চেষ্টা করেন না এমনটা বলা যাবে না।তবে এখানে যারাই আসেন তারা সবাই শতশত ভাসমান শ্বেতপদ্মের রূপশোভা দেখে মুগ্ধ, বিমোহিত ও অভিভূত হন।
বরিশাল শহরের রাজাবাহাদুর সড়ক ও বান্দরোড ঘেঁষা বিআইডব্লিউটিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী কার্যালয় অর্থাৎ হীম নীড় বা চান বাংলো চত্বরের জলাশয় ঘিরেই নয়ানাভিরাম পদ্মপুকুরের অবস্থান।
স্থানীয়দের মতে, প্রতিবছর গ্রীষ্মের শুরুতে এখানে পদ্মফুল ফুটতে শুরু করে। সৌন্দর্য ছড়ানো শ্বেতপদ্ম এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত দেখা যায় এখানে।যা দেখতে প্রতিবছর এইসময়টায় কাছের ও দূরের বহু দর্শনার্থী ছুটে আসেন ।
পাশাপাশি এই কম্পাউন্ডে একই সাথে দেখা মিলছে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত ও দৃষ্টিনন্দন নকশায় তৈরি চানবাংলো ও হীম নীড়। পুরো কম্পাউন্ড জুড়ে রয়েছে ফুল-ফলসহ বিভিন্ন প্রজাতির শত গাছ।বরিশাল সরকারী ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের ছাত্রী চন্দ্র জানান, এই পদ্মপুকুরের কথা অনেক শুনেছেন তিনি। কিন্তু দেখা আর হয়ে ওঠেনি। এবার পদ্মফুলোগুলো দেখে মুগ্ধ হয়ে গেছেন।
আর চানবাংলো কিংবা হীম নীড় যাই বলি, পুরো কম্পাউন্ডের পরিবেশ অনেক সুন্দর। নানা প্রজাতির গাছ-গাছালি এতো গরমেও শীতল রেখেছে এখানটাকে।
আলোকচিত্রী টিটু দাস জানান, বিআইডব্লিউটিএ’র জায়গায় থাকা জলাশয়টি মানুষের কাছে এখন অনেক জনপ্রিয়। বিরল প্রজাতির এ পদ্ম দেখতে দূর-দূরান্ত থেকেও মানুষ আসে। অনেকে ছবি তোলেন-ছবি আকেন, আবার অনেকে পুকুর পাড়ে বসে গল্পের ছলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যঘেরা পরিবেশে সময় কাটান।
তিনি জানান, পদ্মপুকুরের সৌন্দর্য মানুষের মন কাড়বে। এখানে এলে বোঝা যাবে জলজ ফুলই জলের সৌন্দর্য। সরকারী জায়গায় পকুরটির অবস্থান হওয়া আর সীমানাপ্রাচীর ছাড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা ততটা জোরদার না হওয়ায় অনেকেই এ ফুল নষ্ট করেন কিংবা ছিঁড়ে নিয়ে যেতে চান।
তিনি বলেন, এছাড়া বরিশাল-লাকুটিয়া সড়কের লাকুটিয়ায়ও একটি পুকুর রয়েছে, যেখানেও কখনো কখনো পদ্মফুল ফোটে। আগে যদিও সেখানে সেখানে অনেক বেশি ফুলের দেখা মিলতো, এখন তা নেই বললেই চলে।

বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী কার্যালয়সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল নগরের বর্তমান বান্দ রোড সংলগ্ন প্রায় সাড়ে ৫ একর জায়গাজুড়ে স্টিমার কোম্পানির কার্যালয় প্রতিষ্ঠত হয় ব্রিটিশ শাসনামলে। এর বহুদিন পর ১৯৬৫ সালে মেরিন ওয়ার্কশপের তৎকালীন ম্যানেজার জার্মান নাগরিক মি. ইলিগনর বিশেষ ব্যবস্থায় মাটির পাত্রে কিছু শ্বেতপদ্ম’র বীজ সংগহ করে পুকুরের তলদেশে রোপন করেন। এরপর পুরো পুকুর সাদা পদ্মে ছেয়ে যায়। এজন্য এটি পদ্মপুকুর নামে পরিচিতি পায়।
বিআইডব্লিউটিএ’র বরিশালের নির্বাহী প্রকৌশলী এজেডএম শাহনেওয়াজ কবির বলেন, পুকুরটি বরিশালের ও বিআইডব্লিউটিএ’র গর্ব। পুকুরের চারপাশ বাঁধাই করে ওয়াকওয়ে এবং ঘাটলা নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। যাতে দর্শনার্থীরা এর সৌন্দর্য আরো ভালোভাবে উপভোগ করতে পারেন।

Post a Comment

0 Comments