About Barisal

অক্সফোর্ড মিশন চার্চ, বরিশাল

বাংলার ভেনিস বলা হয় বরিশালকে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি এখানে আছে ঐতিহাসিক এবং পুরাকীর্তির নানা নিদর্শন। বরিশালের ইতিহাস আর ঐতিহ্যের সাথে এইসব স্থাপনা ওতপ্রোতভাবে মিশে আছে।দেশের অন্যতম অভিজাত ও সুন্দর গির্জা হল বরিশালের এপিফ্যানি গির্জা বা অক্সফোর্ড মিশন চার্চ। এপিফানি উপাসনালয়-এ গির্জার কেতাবি নাম। ১১৩ বছর পুরনো এ গির্জাটি শুধু সুন্দরই নয়, এশিয়া মহাদেশের দ্বিতীয় বৃহৎ গির্জা এবং দেশের সবচে দৃষ্টিনন্দন পুরাকীর্তিগুলোর একটি।এটি ‘লাল গির্জা’ নামেও পরিচিত।গির্জাটির আরেকটি আকর্ষণীয় বিষয় হচ্ছে এশিয়ার সবচেয়ে বড় ঘণ্টা রয়েছে এখানেই। যা দিনে ৭ বার প্রার্থনার পূর্বে বেজে উঠে।


একতলা গির্জার মূল প্রার্থনাকক্ষটির আয়তন প্রায় ৫০ ফুট। এ কাঠামোর প্রধান প্রকৌশলী ফ্রেডেরিক ডগলাস। মূলত গ্রিক স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত এ গির্জার প্রধান আকর্ষণ বিশাল ও নান্দনিক প্রার্থনাকক্ষ। এর ছাদ কাঠের তৈরি, আর ফ্লোরে সুদৃশ্য মার্বেলের টাইলস। মূল বেদীর উপর একটি বড় ক্রশ স্থাপিত আছে। এমন স্থাপত্য বৈশিষ্ট্যের গির্জা আর দুটি চোখে পড়ে না।


চল্লিশটি খিলানের উপরে এ গির্জাটি দাঁড়িয়ে। ৩৫ একর জমির উপরে উঁচু দেয়াল দিয়ে ঘেরা। তেরটি ছোট-বড় পুকুর, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আবাসিক ছাত্র হোস্টেল, ফাদার ও সিস্টারদের আবাসন, পাঠাগার ও হাসপাতাল নিয়ে এ চার্চটি অবস্থিত। দিনে সাত বার এশিয়ার সবচে বড় ঘণ্টা এ চার্চেই বেজে ওঠে। সুদৃশ্য ঘণ্টার নিচেই চার্চের ছোট্ট অফিস।
১৯০৩ সালে এ চার্চের প্রথম ধাপের কাজ সম্পন্ন হয় ও একই বছর ২৬ জানুয়ারি এটি উদ্বোধন করা হয়। দ্বিতীয় ধাপের কাজ ১৯০৭ সাল পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। লাল ইট দিয়ে নির্মিত শতবর্ষী এ চার্চ চমৎকার রক্ষণাবেক্ষণের সুবাদে ঝকঝকে ও সুদৃশ্য। তবে জনসাধারণের জন্য এখানে প্রবেশ সংক্রান্ত জটিলতা আছে।
গির্জাটি এমনভাবে নির্মাণ করা হয়েছে, যাতে বড় কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগেও এর স্থাপত্যশৈলী বিনষ্ট না হয়। ১৯৬০ ও ১৯৭০ সালের প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়েও গির্জাটি সম্পূর্ণ অক্ষত থেকে যায়।
চার্চের কেয়ারটেকার জানালেন, নিজস্ব সম্প্রদায়ের মানুষ ব্যতীত জনসাধারণের জন্য চার্চের সীমানার ভেতর প্রবেশ নিষেধ। এদেশের বর্তমান সময়ের ঝুঁকিপূর্ণ ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক পরিবেশে নিরাপত্তাজনিত হুমকির আশঙ্কায় রয়েছেন চার্চ সংশ্লিষ্টরা।

Post a Comment

0 Comments